ফেসবুকে প্রেমে পড়ার আগে যে ৬ টি বিষয়ে সাবধান থাকবেন


ফেসবুকে প্রেমে পড়ার আগে যে ৬ টি বিষয়ে সাবধান থাকবেন 

আবু সাঈদঃ পাশের বাড়ির মেয়েটিকে গত ১ মাস ধরে লক্ষ্য করছে ছেলেটি। প্রতিদিন কলেজে যাবার সময় একবার দুজনের দৃষ্টি বিনিময় হয় আবার বাড়ি ফেরার সময় দ্বিতীয়বার। ছেলেটি স্থির থাকতে পারে না একটি মুহূর্তের জন্যও। সবসময় ঐ প্রেয়সীর অবয়ব ভেসে ওঠে ছেলেটির হৃদয়ে। তাই, সারাদিন ছেলেটি ছাদে বসে থাকে এই ভেবে যে, মেয়েটি যেকোনো সময় হয়ত আবির্ভূত হবে পাশের ছাদে। অপেক্ষা অপেক্ষা এবং অপেক্ষা... হঠাৎ হয়ত ঐ মেয়েটির ছাদে আগমন কিন্তু ততক্ষণে অপেক্ষমাণ রোমিও চম্পট। যার জন্য এত অপেক্ষা তার উপস্থিতি ভীতি জাগানিয়া অনুভূতির সৃষ্টি করে ছেলেটির মনে। তাই মনের কথাটি খুলে বলা হয় না তার। তাই, একমাত্র অবলম্বন চিঠি। এটিই ছেলেটির ব্রহ্মাস্ত্র। অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে ছেলেটি তার আবেগের কথা ঐ চিঠিতে স্বরাবদ্ধ করে এক বুক সাহস নিয়ে চিঠিটি ঐ মেয়েটির হাতে পৌঁছে দেয়। এবং মেয়েটিও ঐ চিঠির মাধ্যমেই ঐ ছেলেটির প্রতি তার একই অনুভূতির কথা শেয়ার করে। রচিত হয় ভালোবাসার কাব্য। এই পর্যন্ত পড়ে হয়ত আপনি ভ্রু কুঁচকিয়ে আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে এই আদলের ভালোবাসা এক দশক আগেও এই বাংলায় অতি পরিচিত ছিল। যা কালের গর্ভে এখন বিলীন। প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনের সাথে সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপনের পন্থাও যথেষ্ট বিবর্তিত। এখন যদি একটি ছেলে একটি মেয়ের প্রতি দুর্বলতা অনুভব করে তবে সে কালক্ষেপণ না করে যত দ্রুত সম্ভব তার এই অনুভূতির কথা ঐ মেয়েটির কাছে ব্যক্ত করে। ফেসবুক, টুইটার এমন কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সম্পর্ক স্থাপনের ধারনাকে আমূল পাল্টে দিয়েছে কিংবা বলা যেতে পারে “বৈপ্লবিক পরিবর্তন” সাধন করেছে। বাংলাদেশে ফেসবুক এতটাই জনপ্রিয় যে এখন অধিকাংশ তরুণ-তরুণী এই মাধ্যমটিকে ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপনের একটি “নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম” হিসেবে ব্যবহার করে। অনেকেই ফেসবুকে তাদের ব্যক্তিগত তথ্যগোপন করে। তাই, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফেসবুকের মাধ্যমে স্থাপিত ভালোবাসার সম্পর্কগুলো ভেঙ্গে যায়। এমনকি অনেকে প্রতারিতও হয়ে থাকেন। তাই জেনে নিন, ফেসবুকের মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে যে ৫ টি বিষয় বিবেচনা করবেন-
১। একটি বিষয় সবসময় মনে রাখবেন, ফেসবুকে কখনোই অপরিচিত কারো সাথে বন্ধুত্ব করবেন না। তাই, আপনি ছেলে হন কিংবা মেয়ে হন আপনার নিজ সুরক্ষার স্বার্থেই ভালোবাসার সম্পর্ক তো দূরের কথা অপরিচিত কারো সাথে বন্ধুত্বও করবেন না।

২। আপনি কারো সাথে বেশ কিছুদিন ধরেই চ্যাট করছেন। তার সাথে কথা বলে আপনি রীতিমত মুগ্ধ। সে আপনাকে দেখা করার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাল। সাবধান... মিষ্টি কথাতেই ভুলে গেলে চলবে না। ভালো করে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিন। প্রয়োজনে আপনার বন্ধুদের সাথে ব্যাপারটি শেয়ার করুন। তাদের মতামত নিন। আর দেখা করার সিদ্ধান্ত নিলে সাথে কাউকে নিয়ে যান। কাউকে না জানিয়ে কখনোই দেখা করতে যাবেন না।
৩। ফেসবুকে অনেকেই ফেক আইডি বা না নকল একাউন্ট ব্যবহার করে থাকে। হয়ত আপনি ভাবছেন আপনি কোন পরিসদৃশ ললনার সাথে কথোপকথন করছেন। কিন্তু একটা সময় আপনি আবিষ্কার করতে সমর্থ হলেন যে, আপনার আবেগভরা অনুভূতিগুলো আপনার মতই কোন ছেলের সাথে শেয়ার করেছেন। এই লজ্জা থেকে পরিত্রান পাবার কোন পথ হয়ত আপনি খুজে পাবেন না।
৪। বর্তমান যুগ হচ্ছে ডি এস এল আর এর যুগ। আপনি হয়ত কোন ছেলের বা মেয়ের ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচার দেখেই বাংলা সিনেমার “প্রথম দেখায় প্রেম” এর মত প্রেমের সাগরে হাবুডুবু খেলেন। কিন্তু ঐ ব্যক্তির ডি এস এল আর বিহীন চেহারা দেখে আপনার ভবলীলা সাঙ্গ হবার জোগাড়। তাই, প্রোফাইল পিকচার দেখেই সম্পর্কের সিঁড়িতে পা দেবেন না।
৫। বর্তমানে ফেসবুকে এক শ্রেণীর প্রতারক চক্র রয়েছে যারা বিভিন্নভাবে তরুণ-তরুণীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে থাকে। অপহরণ, মানহানি, সম্মানহানি এমন অসংখ্য ঘটনা ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আমাদের চারপাশে ঘটছে। তাই, এই বিষয়টি বিবেচনা করে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচিত কারো সাথে সম্পর্ক বন্ধনের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। আবেগের বশবর্তী হয়ে এক্ষেত্রে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিৎ নয়।

No comments:

Post a Comment

Ads Inside Post