স্বামী
বা স্ত্রীর সন্তুষ্টির জন্যে অনেকেই মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন মিলনে অংশ
গ্রহন করেন। আবার অনেক স্বামীই স্ত্রীর এহেন অনীহা দেখে বিরক্তও হন ।
বন্ধুদের কাছে তাদের সংসারের অনেক গল্প শুনান। সেক্সটাই একটি সম্পর্কের
একমাত্র বন্ধন নয় , তবুও স্বামী স্ত্রীর আত্মার মিলনের জন্যেই এর ভূমিকা
অপরিসীম ।
জেনে নেই সেক্স বা যৌন মিলনে অনীহার কারণ : অনেক
পুরুষ ও নারী আছেন যারা যৌন মিলনে একেবারেই উৎসাহ অনুভব করেন না । একে বলে
এভারসন, আর যারা কম অনুভব করেন তাদের এই সমস্যা কে বলে হাইপোভারসন । এগুলো
হচ্ছে সাইকো সেক্সুয়াল সমস্যা। তাদের অবশ্যই সাইকিয়াট্রির ডাক্তারের
সাথে পরামর্শ করে কাউন্সেলিং করতে হবে। অন্যদিকে যারা স্বাভাবিক মানুষ এবং
যাদের যৌন আবেগ আছে কিন্তু বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে সেক্স এ অনীহার সৃষ্টি
হয়েছে , তাদের সমস্যা গুলো হলো :
(১) পার্টনারের প্রতি ভালোবাসার অভাব (২)
কাজে ব্যস্ততা ও অতিরিক্ত টায়ার্ড থাকা (৩) দীর্ঘ দিনের বিবাহিত জীবনে একে
অপরের প্রতি শারীরিক আগ্রহ হারিয়ে ফেলা (৪) মন খারাপ থাকা (৫) যৌন মিলনে
কষ্ট হওয়া বা লুব্রিকেশনের অভাব থাকা (৬) কারো প্রতি তীব্র ঘৃণা বোধ (৭)
সেক্স এ আনন্দ না পাওয়া (৮) সেক্সের সময় পার্টনারের রেসপন্স এর অভাব থাকা
(৯) যৌনাঙ্গে রোগ থাকা (১০) একটি নতুন জীবন ও অভিজ্ঞতার ব্যাপারে ভয় ও
আতঙ্ক
এযাতীয় সমস্যা গুলোর সবচেয়ে বড় ওষুধ
হচ্ছে কাউন্সেলিং। অর্থাৎ একজন আপনাকে সঠিক উপদেশ দিবেন এবং আপনাকে সততার
সাথে মন খুলে তার উপদেশ গ্রহণ করতে হবে ।
উপদেশ / উপায় বা কিছু পরামর্শ : (১) মেয়েদের
জন্যে মিলনে ভালোবাসা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । কখনোই এমন ব্যক্তিকে
বিয়ে করবেন না যাকে দেখে আপনার মনে ভালোবাসা বা শ্রদ্ধাবোধের সৃষ্টি হয়
না । প্রেম করেই বিয়ে করতে হবে তা না। কিন্তু অজানা অচেনা মানুষ কেও বিয়ে
করা ঠিক নয় । বাবা মা কে বুঝিয়ে বলুন তাদের পছন্দ করা পাত্রকে আপনি একটু
বুঝে নিতে চান ।

(২)
কর্মজীবী মহিলারা এমনকি গৃহিণীরাও কাজে কত ব্যস্ত থাকেন তা স্বামীরা বুঝতে
চান না। কিন্তু স্বামীর আগ্রহে তখন অসহায় বোধ হয়। অনেক সময় বুঝিয়ে বলা
যায়। কিন্তু রোজ রোজ এমন করলে স্বামীরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। আপনি
নিজেকে ফ্রেশ করতে, ক্লান্তি দূর করতে গোসল করতে পারেন। হাত মুখ ধুয়ে বা
ওজু করে নিলেও ক্লান্তি বোধ কমে। সুন্দর সুগন্ধিও আপনার ক্লান্তি কাটিয়ে
উঠতে সাহায্য করবে ।
(৩) একটি মানুষের সাথে দীর্ঘ দিন থাকলে
একঘেয়ে লাগতেই পারে। কিন্তু যদি পারস্পরিক শ্রদ্ধা , বিশ্বাস ভালোবাসা
থাকে তবে কোন বাঁধাই বাঁধা নয়। আপনি একই পরিবেশে মিলন না করে বিভিন্ন
পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেন। এতে লজ্জা বা হাসির কিছু নেই। দূরে কোথাও ঘুরতে
যাওয়া বা শোবার ঘরের গেট আপ চেঞ্জ যেমন কেন্ডেল দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন।
বিভিন্ন ধরনের নাইটি , সুন্দর পোশাক আপনাকে আকর্ষণীয় করবে । আপনিও তখন
আগ্রহ বোধ করবেন ।
(৪) মন ভালো রাখার সবচেয়ে ভালো উপায়
হচ্ছে কারো কাছে কিছু আশা না করা , কারণ তা বেশির ভাগ সময়ই পূরণ হয় না ।
কিছু মানুষ আছেন যারা কখনো আপনাকে নিরাশ করবেন না। যেমন বাবা , মা , ভাই ,
বোন তাদের কাছে কাছে রাখুন। দেখবেন মনের ভাষাও বদলে যাবে।
(৫) তীব্র ঘৃণা বোধ তা যার উপরেই হোক, এমন
সময় যৌন মিলনের চেষ্টা করাও ঠিক নয়। স্বামীকে এ ব্যাপারে অপেক্ষা করতে
হবে সঠিক সময়ের জন্যে। চেষ্টা করবেন রাগ ক্ষোভ কম রাখতে। শ্বশুর শাশুড়ি,
দেবর ননদের সাথে বুদ্ধিমত্তার সাথে সহজ সম্পর্ক রাখতে চেষ্টা করুন যেহেতু
সংসারটা আপনারই।
(৬) স্বামীর যদি চাহিদা কম থাকে স্ত্রীরও
এক সময় অনীহা তৈরি হবে এটাই স্বাভাবিক। ব্যস্ততা থেকে সময় বের করতে বলুন।
আপনার সাথে সুখ দুঃখের আলোচনা করতে বলুন। সপ্তাহে এক দিন অন্তত বাইরে
নিয়ে যেতে বলুন। ঘর টিপ টপ ভাবে গুছিয়ে রাখুন যাতে তারও ঘরে ফিরে শান্তি
লাগে। ফুলদানিতে ফুল; এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন।

(৭)
সেক্স স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের এমন একটি ধাপ যা শুধু দুটি শরীর নয় , মন
কেও যুক্ত করে । এটি খুবই স্বাভাবিক সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত একটি ব্যবস্থা। যা
বংশ বৃদ্ধির জন্যে অত্যাবশ্যক। অহেতুক ভয় ও আতংক আপনাদের মধ্যে শুধু
দূরত্বেরই সৃষ্টি করবে। সেক্স এ একটিভ ভূমিকা পুরুষেরই। আপনি শুধু কো-
অপারেট করবেন। আপনার স্বামীকে যদি বোঝাতে চান আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন
সামান্য কষ্টটা আপনাকে হাসিমুখেই মেনে নিতে হবে ।
শেষ করার আগে বলি, আপনি যদি চান আপনার
প্রিয় মানুষটি আপনার প্রতি ভালোবাসায় আর্দ্র থাকুক তবে সব জটিলতাই
কাটিয়ে উঠতে পারবেন । আন্তরিকতা, বিশ্বাস, শ্রদ্ধার এই সুন্দর সম্পর্কে
সুখী থাকুন ।